পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি

নতুনদেশ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৮ এএম

পেরিফেরাল স্নায়ুতন্ত্র শরীরের একটা যোগাযোগ পদ্ধতি, যেটা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে, অর্থাৎ মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ড এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে সংকেত পাঠায়। এই সংকেতগুলো সংজ্ঞাবহ বার্তা হতে পারে, যেমন- ঠাণ্ডা হাত, পেশির সংকোচনের জন্য বার্তা যেটা শরীরের নড়াচড়ায় সাহায্য করে এবং আরও অনেক কিছু। পেরিফেরাল স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হলে তাকে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বলে। মাই উপচার অবলম্বনে জানাচ্ছেন মো. রাকিব

লক্ষণ ও উপসর্গ
লক্ষণ ও উপসর্গগুলো নির্ভর করে কোন স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার ওপর।

মোটর নার্ভে ক্ষতি: এর কারণে পেশিতে খিঁচুনি, পেশির দুর্বলতা, পেশিতে ঝাঁকি মারা এবং পেশি কুঁচকে যায়।

সংজ্ঞাবহ নার্ভে ক্ষতি: এর কারণে কোনো সংবেদন অনুভব করতে পারা যায় না, যেমন- স্পর্শ, ব্যথা এবং তাপমাত্রার পরিবর্তন এবং মোটর সমন্বয়ে অসুবিধা, যেমন- হাঁটা, বোতাম আটকানো ইত্যাদি।

অটোনোমিক নার্ভে ক্ষতি: এর কারণে ঘামে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হয়, গরম সহ্য হয় না, এবং শরীরের ভেতরের অঙ্গ সম্পর্কিত অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।

কারণগুলো কী কী?
পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির সবচেয়ে প্রভাবশালী কারণ হলো ডায়াবেটিস। এর অন্য কারণগুলো হলো- ভিটামিনের মাত্রা কমে যাওয়া, স্নায়ুতে আঘাত, মদপানে আসক্তি, সংক্রমণ, যেমন- লাইম অসুখ এবং ডিপথেরিয়া। এ ছাড়া রক্তনালিতে প্রদাহ, ক্রনিক যকৃতের অসুখ, ক্রনিক কিডনির অসুখ, রিউমাটয়েড বাত। পাশাপাশি এইচআইভি, হারপিস এবং ভারিসেলা-জোস্টার ভাইরাস সংক্রমণ। শরীরে অতিরিক্ত বিষাক্ত পদার্থ যেমন- আর্সেনিক, মার্কারি এবং লেড প্রবেশ করলেও পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা
নানা উপায়ে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি নির্ণয় করা হয়। যেমন- ডায়াবেটিস বা ভিটামিনের অভাব নির্ণয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষা। নার্ভ কন্ডাকশন পরীক্ষা। ইমেজিং প্রক্রিয়া যেমন- এক্স-রে, সিটি স্ক্যান এবং ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) পরীক্ষা। এ ছাড়া ইলেকট্রোমায়োগ্রাফি, স্নায়ুর বায়োপসি করেও রোগ নির্ণয় করা যায়।

যেসব কারণে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হয় সেই কারণ ও উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। যেমন- ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ ও তার চিকিৎসা। ভিটামিনের জন্য খাওয়ার ওষুধ বা ইনজেকশন। যদি কোনো ওষুধের কারণে এই অসুখ হয় তাহলে সেই ওষুধ বন্ধ করা।

কর্টিকোস্টেরয়েডস, ইমুনোগ্লোবুলিন ইনজেকশন, ইমুনোসাপ্রেস্যান্টস। স্নায়ুর ব্যথা কমাতে ওষুধ প্রয়োগ। সংবেদন অনুভূতি কমে যাওয়ার জন্য সবসময় জুতো ও মোজা পরে থাকা উচিত, যাতে পায়ের পাতায় কোনো আঘাত না লাগে।